অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ সম্পর্কে জানতে চান?  তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন কারন বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিতা লাভ করা এই ব্যাংকটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শহরাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত শাখার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে আধুনিক ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আজ আমরা অগ্রণী ব্যাংকের শাখা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য, সেবার ধরন ও এর গ্রাহকদের জন্য সুবিধাসমূহ নিয়ে আলোচনা করবো। তাহলে দেরি কেন চলুন বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক। 

অগ্রণী ব্যাংক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য

১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ অগ্রণী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এর প্রধান কার্যালয় ঢাকা বিভাগের মতিঝিলে অবস্থিত। অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ বাংলাদেশের গ্রামীণ ও শহুরে অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা ৯৬২টি শাখার মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা নিরলস ভাবে সেবা প্রদান করে আসছে। এই বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যাংকটি গ্রাহকদের আমানত সংরক্ষণ, ঋণ প্রদান ও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ

অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩৬টি কর্পোরেট শাখা, ৪৩টি অনুমোদিত পরিবেশক (Authorized Dealer-AD) শাখা, এবং ৫৩টি আঞ্চলিক কার্যালয়। এছাড়া ১১টি সার্কেল অফিস এবং হেড অফিসে ৩৬টি বিভাগ রয়েছে। এই শাখাগুলোর মাধ্যমে ব্যাংকটি গ্রাহকদের জন্য রিয়েল-টাইম অনলাইন ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা জেলায়ই অগ্রণী ব্যাংকের ৮৮টি শাখা রয়েছে, যা এর ব্যাপকতার প্রমাণ বহন করে।নিম্নে ছক আকারে ৬৪ জেলার অগ্রণী ব্যাংক শাখা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে:

অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ – জেলাভিত্তিক তালিকা

জেলার নামঅগ্রণী ব্যাংক শাখা আছে কিনা
বাগেরহাটহ্যাঁ
বান্দরবানহ্যাঁ
বরগুনাহ্যাঁ
বরিশালহ্যাঁ
ভোলাহ্যাঁ
বগুড়াহ্যাঁ
ব্রাহ্মণবাড়িয়াহ্যাঁ
চাঁদপুরহ্যাঁ
চট্টগ্রামহ্যাঁ
চুয়াডাঙ্গাহ্যাঁ
কুমিল্লাহ্যাঁ
কক্সবাজারহ্যাঁ
ঢাকাহ্যাঁ
দিনাজপুরহ্যাঁ
ফরিদপুরহ্যাঁ
ফেনীহ্যাঁ
গাইবান্ধাহ্যাঁ
গাজীপুরহ্যাঁ
গোপালগঞ্জহ্যাঁ
হবিগঞ্জহ্যাঁ
জামালপুরহ্যাঁ
যশোরহ্যাঁ
ঝালকাঠিহ্যাঁ
ঝিনাইদহহ্যাঁ
জয়পুরহাটহ্যাঁ
খাগড়াছড়িহ্যাঁ
খুলনাহ্যাঁ
কিশোরগঞ্জহ্যাঁ
কুড়িগ্রামহ্যাঁ
কুষ্টিয়াহ্যাঁ
লক্ষ্মীপুরহ্যাঁ
লালমনিরহাটহ্যাঁ
মাদারীপুরহ্যাঁ
মাগুরাহ্যাঁ
মানিকগঞ্জহ্যাঁ
মেহেরপুরহ্যাঁ
মৌলভীবাজারহ্যাঁ
মুন্সীগঞ্জহ্যাঁ
ময়মনসিংহহ্যাঁ
নওগাঁহ্যাঁ
নারায়ণগঞ্জহ্যাঁ
নড়াইলহ্যাঁ
নাটোরহ্যাঁ
নেত্রকোণাহ্যাঁ
নীলফামারীহ্যাঁ
নোয়াখালীহ্যাঁ
পাবনাহ্যাঁ
পঞ্চগড়হ্যাঁ
পটুয়াখালীহ্যাঁ
পিরোজপুরহ্যাঁ
রাজবাড়ীহ্যাঁ
রাজশাহীহ্যাঁ
রাঙ্গামাটিহ্যাঁ
রংপুরহ্যাঁ
সাতক্ষীরাহ্যাঁ
শরীয়তপুরহ্যাঁ
শেরপুরহ্যাঁ
সিরাজগঞ্জহ্যাঁ
সুনামগঞ্জহ্যাঁ
সিলেটহ্যাঁ
টাঙ্গাইলহ্যাঁ
ঠাকুরগাঁওহ্যাঁ
চাঁপাইনবাবগঞ্জহ্যাঁ

ব্যাংকটির শাখা নেটওয়ার্ক শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান যেমন অগ্রণী এক্সচেঞ্জ হাউজ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, এবং কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য রেমিট্যান্স সেবা প্রদান করছে। এই বিস্তৃত শাখা নেটওয়ার্ক গ্রাহকদের জন্য সহজে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহের সেবাসমূহ

অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সেবা প্রদান করে, যা গ্রাহকদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে সহায়ক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সেবা হলো:

  • অনলাইন ব্যাংকিং: সকল শাখায় রিয়েল-টাইম অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে। অগ্রণী স্মার্ট ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা ২৪ ঘণ্টা ব্যাংকিং সেবা উপভোগ করতে পারেন।
  • ঋণ সুবিধা: সরকারি কর্মচারীদের জন্য গৃহ নির্মাণ ঋণ, এসএমই ঋণ, এবং খেলাপি ঋণ আদায় কর্মসূচির মতো সুবিধা রয়েছে।
  • রেমিট্যান্স সেবা: প্রবাসীদের জন্য দ্রুত ও নিরাপদ রেমিট্যান্স সেবা প্রদান করা হয়।
  • এ-চালান সেবা: গ্রাহকরা ঘরে বসে অনলাইনে চালানের অর্থ জমা দিতে পারেন।
  • অফশোর ব্যাংকিং: বৈদেশিক মুদ্রায় মেয়াদি আমানত হিসাব খোলার সুবিধা।

এই সেবাগুলো গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেনকে আরও সহজ ও নিরাপদ করে তুলেছে। অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ এর মাধ্যমে গ্রাহকরা বিকাশ থেকে ব্যাংকে এবং ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা স্থানান্তরের সুবিধাও পান, যা ২০২০ সালের ২০ আগস্ট থেকে চালু হয়েছে।

কেন অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ গ্রাহকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?

অগ্রণী ব্যাংকের শাখাগুলো গ্রাহকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সাশ্রয়ী, নিরাপদ, এবং সহজলভ্য ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে। গ্রামীণ অঞ্চলে যেখানে বেসরকারি ব্যাংকের উপস্থিতি কম, সেখানে অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ গ্রাহকদের আর্থিক প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, নওগাঁ জেলায় অগ্রণী ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয় গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখছে। এছাড়া, ব্যাংকটির অনলাইন শাখার সংখ্যা ৯৬২টি, যা গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সুযোগ বাড়িয়েছে।

ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে ১০ জন সদস্য রয়েছেন, যার নেতৃত্বে রয়েছেন চেয়ারম্যান। বর্তমানে (২০২৫ সাল পর্যন্ত) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ড. জায়েদ বখত এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে রয়েছেন মো. মুরশেদুল কবীর। এই দক্ষ নেতৃত্বের কারণে অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ গ্রাহকদের কাছে আরও নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে।

অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহের সুবিধা ও অসুবিধা

প্রতিটি ব্যাংকের যেমন সুবিধা হয়েছে তেমনি প্রতিটি ব্যাংকের বেশ কিছু শাখায় অসুবিধা রয়েছে যা ব্যাংকের অসুবিধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তবে আজকের এই আলোচনায় আমরা মূলত আপনাকে অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহের সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে জানাবো এ বিষয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়েছে:

সুবিধা:

  • দেশজুড়ে বিস্তৃত শাখা নেটওয়ার্ক।
  • সরকারি মালিকানাধীন হওয়ায় আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত।
  • ডিজিটাল ও ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকিংয়ের সমন্বয়।
  • প্রবাসীদের জন্য রেমিট্যান্স সুবিধা।

অসুবিধা:

  • কিছু গ্রামীণ শাখায় আধুনিক প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা।
  • গ্রাহক সেবায় মাঝে মধ্যে বিলম্ব।

তবে, ব্যাংকটি ক্রমাগত তার সেবার মান উন্নত করছে। অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী নতুন শাখা উদ্বোধন ও সেবা সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে ঝিনাইদহের খালিশপুরে নতুন শাখা উদ্বোধন করা হয়।

আরও জানতে পারেনঃ জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন শাখা সমূহ ২০২৫

শেষ কথা

অগ্রণী ব্যাংক শাখা সমূহ বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে একটি নির্ভরযোগ্য নাম। এর বিস্তৃত শাখা নেটওয়ার্ক, আধুনিক সেবা, এবং গ্রাহককেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এটিকে অনন্য করে তুলেছে। আপনি যদি নিরাপদ ও সাশ্রয়ী ব্যাংকিং সেবা খুঁজে থাকেন, তাহলে অগ্রণী ব্যাংক আপনার জন্য একটি চমৎকার বিকল্প। এই ব্লগপোস্টের মাধ্যমে আমরা আশা করি আপনি অগ্রণী ব্যাংকের শাখা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। আপনার নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করে আজই এর সেবা গ্রহণ করুন এবং আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।

FAQ

অগ্রণী ব্যাংকের কতটি কর্পোরেট শাখা

৩৬টি ।

অগ্রণী ব্যাংকের মোট কতটি শাখা রয়েছে?

৯৬২ টি।

অগ্রণী ব্যাংকের ওয়েবসাইট?

https://www.agranibank.org/

 

অন্যান্য পোস্টগুলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *