ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোন বর্তমান সময়ে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কার লোন প্রত্যাশা কার লোন নামে পরিচিত, যা গ্রাহকদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে থাকে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ব্যক্তিগত গাড়ি ক্রয় ব্যবহার করার জন্য লোন প্রদান করে থাকে। একজন আবেদনকারী সর্বোচ্চ ৪০ লক্ষ টাকা সহজ শর্তে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক হতে গ্রহণ করতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবো।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোন কি ?
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কার লোন হচ্ছে এমন একটি লোন পদ্ধতি যার মাধ্যমে গ্রাহক আর তার স্বপ্নের গাড়ি ক্রয় করতে পারবেন এবং ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে লোনের আবেদনকারী ন্যূনতম ১ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০ লক্ষ টাকা ডাচ্-বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন যা গাড়ির মোট মূল্যের ৫০ শতাংশ হতে হবে।
আরো জানুন >>>>>>ইসলামী ব্যাংক কার লোন বা গাড়ি ঋণ যেভাবে নিবেন ২০২৫<<<<<<<<
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কার লোনের বৈশিষ্ট্য
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক বরাবরই গ্রাহকদের স্বপ্ন পূরণে রয়েছে তাদের পাশে, তবে কোন গ্রাহকের স্বপ্ন যদি থাকে তার একটি পছন্দের গাড়ি থাকবে সেক্ষেত্রে ডাচ্-বাংলা গ্রাহকদের পাশে রয়েছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কার লোনের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে সকল বৈশিষ্ট্য অন্য সকল ব্যাংকের গাড়ির লোন থেকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংককে পৃথক করেছে। সকল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছেঃ
- গাড়ি করার জন্য ন্যূনতম ১ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া যাবে।
- গাড়ি ক্রয় করার জন্য সর্বাধিক ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে যা গাড়ির মোট মূল্যের ৫০ শতাংশ হতে হবে।
- গাড়ি লোনের লোন পরিশোধ করার জন্য গ্রাহক ন্যূনতম ১ বছর ও সর্বাধিক ৫ বছর সময় পাবেন।
- মাসিক কিস্তি আকারে ঋণ পরিশোধ করা যাবে।
- দ্রুত ও সহজ শর্তে লোন গ্রহণের সুবিধা।
- সীমিত ইন্টারেস্ট রেট।
এবার তবে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের গাড়ির লোনের যোগ্যতা সমূহ জেনে নেওয়া যাক।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কার লোনের যোগ্যতা
প্রতিটি ব্যাংকের মতোই ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে এ সকল শর্তাবলি অনুযায়ী ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের গ্রাহকেরা কার লোনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হন। নিম্নে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কার লোন পাওয়ার যোগ্যতা উপস্থাপন করা হয়েছে:
- আবেদনকারীর বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর ও সর্বাধিক বয়স ৭০ বছরের নিচে হতে হবে।
- আবেদনকারীর প্রতি মাসে ন্যূনতম আয় ২৫ হাজার টাকা হতে হবে।
- অবশ্যই আবেদনকারী প্রার্থী বেতন ভোগী কর্মচারী /স্বনির্ভর ব্যক্তি /ব্যবসায়ী /জমির মালিক /বাড়িওয়ালা হতে হবে ও প্রমাণপত্র প্রদান করতে হবে।
আরো জানুন >>>>>>পূবালী ব্যাংক গাড়ি লোন (আপডেট তথ্য)<<<<<<<<
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে কার লোনের জন্য আবেদন করতে বেশ কিছু নথিপত্র আবেদনকারীকে প্রদান করতে হয়। এসকল নথিপত্রের মধ্যে রয়েছে
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি রঙিন ছবি প্রয়োজন হবে। তবে প্রয়োজন সাপেক্ষে অতিরিক্ত ছবি আপনার সাথে রাখুন।
- গাড়ি লোনের জন্য অবশ্যই জামিনদার অর্থাৎ গ্যারেন্টারের প্রয়োজন হবে। গ্যারান্টারের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি ব্যাংকে প্রদান করতে হবে।
- আবেদনকারী গ্রাহকের সর্বশেষ প্রদানকৃত রিটার্ন/আয়কর রশিদ /আয়কর ছাড় পএ এর ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
- গ্যারান্টার অর্থাৎ জামিনদারের ব্যাংকিং তথ্য প্রদান করতে হবে।
- ঠিকানা ভেরিফিকেশনের জন্য ইউটিলিটি বিল এর সদ্য কপি প্রদান করতে হবে। যেমন: বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানি বিল।
- আবেদনকারীর ও জামিনদারের যদি অফিস আইডি কার্ড অর্থাৎ ভিজিটিং কার্ড থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
- আবেদনকারীরা যদি বেতন পাখি অর্থাৎ সরকারি কিংবা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে কর্ম তো রয়েছেন তো তাহলে অবশ্যই তাদের কর্তৃপক্ষের নিকট হতে পে স্লিপ ও কভার লেটার এবং বেতন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে প্রদান করতে হবে।
- আবেদনকারী যদি ব্যবসায়ী হন সেক্ষেত্রে তাকে অবশ্যই বৈধ ব্যবসার লাইসেন্সের প্রদান করতে হবে ও মাসিক আয় এর বিবরণী প্রদান করতে হবে।
- গাড়ির ডিলারশিপ এ যানবাহনের উদ্ধৃতি আবেদনকারী দ্বারা যথাযথভাবে গৃহীত।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিগত ৬ মাস কিংবা ১২ মাসের লেনদেনের স্টেটমেন্ট প্রদান করতে হবে।
এ সকল নথিপত্র ছাড়া আর কোন নথিপত্র যদি প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা আপনাকে এ বিষয়ে অবহিত করবেন।
আরো জানুন >>>>>>ঢাকা ব্যাংক কার লোন<<<<<<<<
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোনের শর্তাবলি
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক থেকে গাড়ি ক্রয় করার জন্য ঋণ নিতে হলে বেশ কিছু শর্তাবলি অবশ্যই গ্রাহককে মানতে হবে এ সকল শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে
- গ্রাহকের অবশ্যই মাসিক ন্যূনতম আয় ২৫ হাজার টাকা হতে হবে নতুবা আবেদনকারী ডাচ্-বাংলা ব্যাংক হতে কার লোন নিতে পারবেন না।
- অবশ্যই আবেদনকারীর বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হবে এবং সর্বাধিক ক্ষেত্রে ৭০ বছর হতে হবে।
- দুইজন জামিনদার অর্থাৎ গ্যারেন্টারের প্রয়োজন হবে।
- ডাচ্-বাংলা ব্যাংক হতে পূর্বে গ্রাহক যদি লোন নিয়ে থাকে অবশ্যই উক্ত লোনের প্রয়োজনীয় ও তথ্য প্রদান করতে হবে।
- আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক ও করদাতা হতে হবে এবং আবেদনকারীর ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা থাকতে হবে বৈধ উপায়ে।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোনের ফি ও চার্জ
প্রতিটি ব্যাংকের মতো ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোন এর বেশ কিছু চার্জ রয়েছে যা ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হয়। তবে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এর ব্যতিক্রম নয়। নিম্নে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কার লোনের ফি ও চার্জ উপস্থাপন করা হয়েছে
- প্রক্রিয়াকরণ ফি ১% প্রদান করতে হয়।
- দ্রুত নিষ্পত্তি ফি ২% প্রদান করতে হয় যা ১০০০ টাকা যেটি বেশি।
- বিলম্বে পরিশোধ ফি প্রযোজ্য নয়।
- অনুমোদন চিঠি ফী প্রযোজ্য নয়।
- অতিরিক্ত কোন চার্জ ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কার লোনে নেই।
ডাচ্-বাংলা কার লোনের মাধ্যমে কি কি গাড়ি ক্রয় করা যাবে
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের গাড়ি ঋণের মাধ্যমে যে সকল গাড়ি ক্রয় করা যাবে তার মধ্যে রয়েছে: অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, মাইক্রো, জিপ,ব্রান্ড নিউ প্রাইভেট কার, রিকন্ডিশন বা পুরাতন প্রাইভেট কার ইত্যাদি।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক থেকে যে সকল গ্রাহক গাড়ির লোন নিতে পারবেন
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক থেকে যে সকল গ্রাহকেরা গাড়ি লোন নিতে পারবেন তাদের মধ্যে রয়েছেন
- সরকারি চাকরিজীবী যাদের প্রতি মাসে ন্যূনতম আয় ২৫ হাজার টাকা।
- বেসরকারি চাকরিজীবী যাদের প্রতি মাসের আয় ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা।
- সরকারি হবে সরকারি স্কুলের শিক্ষক যাদের আয় ২৫ হাজার টাকা।
- কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর।
- ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী।
- জমির মালিক যাদের আয় প্রতিমাসে ন্যূনতম আয় ২৫ হাজার।
- আয়কর প্রদানকারী ব্যবসায়ী।
- মেট্রোপলিটন এলাকার বাড়ির মালিক।
এছাড়া সেসকল গ্রাহকের বৈধ্যভাবে মাসে ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা রয়েছে তারা প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রদান করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক থেকে গাড়ি ক্রয় করার জন্য লোন নিতে পারবেন।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোন সম্পর্কিত প্রশ্নবলি
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোন এর পরিমাণ কত ?
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক হতে গ্রাহকেরা ন্যূনতম ১ লক্ষ টাকা হতে সর্বাধিক ৪০ লক্ষ টাকা লোন নিতে পারবেন অবশ্য উক্ত লোনের পরিমাণের হার মোট লোনের ৫০% হতে হবে।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোনের সুদের হার কত ?
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের লোনের সুদের হার সাধারণত ৯% হতে ১২ এর মধ্যে হয়ে থাকে। তবে এটি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নিয়মাবলি অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কার লোন পরিশোধ করার সময়সীমা কত ?
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের লোন পরিশোধ করার সময়সীমা ১২ মাস থেকে ৬০ মাস। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের লোন পরিশোধ করার জন্য গ্রাহকেরা প্রতিমাসে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
সার কথা
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশের বেসরকারি একটি জনপ্রিয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক গ্রাহকদের সুবিধার্থে গাড়ির লোন সহজ শর্তে প্রদান করছে যার মাধ্যমে গ্রাহকেরা তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। প্রত্যাশা করি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে ” ডাচ্-বাংলা কার লোন ” সম্পর্কিত সকল তথ্য জানাতে পেরেছি।