দিশা এনজিও লোন ও দিশা এনজিও শাখা সমূহ ( আপডেট তথ্য )

দিশা এনজিও লোন ও দিশা এনজিও শাখা সমূহ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। কারন দিশা এনজিও (Development Initiative for Social Advancement – DISA) বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য অলাভজনক সংস্থা। ১৯৯৩ সাল থেকে দিশা এনজিও বাংলাদেশে বসবাসরত সকল নাগরিকের জন্য  দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুদ্রঋণ প্রদান ও সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়নে কাজ করে আসছে। 

আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে দিশা এনজিও লোন, দিশা এনজিও শাখা সমূহ, সংস্থাটির সার্বিক কার্যক্রম, লোন নেওয়ার যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, এবং উইকিপিডিয়া তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো। তাহলে আলোচনাটি শুরু করা যাক

দিশা এনজিও লোন কী

দিশা এনজিও লোন প্রোগ্রামটি প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, কৃষক, নারী ও নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য তৈরি  করা হয়েছে। এই ঋণের মাধ্যমে সুবিধাভোগীরা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারেন। দিশা এনজিও লোনের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এসকল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে:

• জটিল ডকুমেন্টেশন ছাড়াই সহজে ঋণ পাওয়া সম্ভব।
• বাণিজ্যিক ব্যাংকের তুলনায় কম সুদে ঋণ পাওয়া যায়। 
• কিস্তি শুরুর আগে ১৫ দিনের গ্রেস পিরিয়ড।
•  ঋণগ্রহীতা বা তার পরিবারের কোনো সদস্যের (দিসা এনজিও সদস্য) মৃত্যু হলে ঋণ মওকুফ করে থাকে দিসা এনজিও। 

দিশা এনজিও লোন প্রোগ্রামের মাধ্যমে কৃষি, মৎস্য চাষ, গবাদি পশু পালন ও  ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। তবে  বিশেষ করে দিসা এনজিও নারীদের আর্থিক স্বাবলম্বী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

দিশা এনজিও লোন কত টাকা লোন দেয়

দিশা এনজিও লোন হিসেবে ৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ কয়েক লক্ষ টাকা লোন প্রদান করে থাকে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী। তবে লোন প্রদান করার ক্ষেত্রে দিসা এনজিও গ্রাহকদের আর্থিক অবস্থা ও গ্রাগকদের লেনদেন পর্যালোচনা করে লোন প্রদান করে থাকেন।

দিশা এনজিও লোন নেওয়ার যোগ্যতা

দিশা এনজিও থেকে লোন পেতে অবশ্যই নিম্নলিখিত যোগ্যতা পূরণ করতে হবে:

• আবেদনকারীর বয়স নূন্যতম ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
• বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
• সঞ্চয় হিসাব: দিশার যেকোনো শাখায় সঞ্চয় হিসাব থাকতে হবে।
• ঋণ পরিশোধের জন্য স্থিতিশীল বৈধ আয়ের উৎস থাকতে হবে।
• কৃষক, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, নারী, এবং নিম্ন আয়ের ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পান।

এছাড়া, আবেদনকারীকে স্থানীয় শাখার নিয়মিত সভায় অংশগ্রহণ করতে হতে পারে। একটি শাখার অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি সভা থেকে থাকে।

দিশা এনজিও লোনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

লোনের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নিম্নলিখিত কাগজপত্র জমা দিতে হবে:

• জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) ফটোকপি।
• দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।

• ঠিকানার প্রমাণপত্র (যেমন: ইউটিলিটি বিল বা স্থানীয় চেয়ারম্যানের সনদ)।
• আয়ের উৎসের প্রমাণ (যেমন: ব্যবসার রেকর্ড বা কৃষি কার্যক্রমের প্রমাণ)।
• গ্যারান্টারের তথ্য (প্রয়োজন হলে)।

এই কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা দেওয়ার পর দিশা এনজিও এর আপনার নিকটস্থ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আবেদন পর্যালোচনা করে ৭-১৫ দিনের মধ্যে ঋণ অনুমোদন করেন।

দিশা এনজিও কেমন

দিশা এনজিও গত ৩১ বছর ধরে বাংলাদেশের মধ্যবিও ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করে আসছে। এটি একটি এমআরএ (Microcredit Regulatory Authority) সনদপ্রাপ্ত সংস্থা (সনদ নং: ০১৩০৬-০০৪৮০-০০০২৪)। দিশার কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে:

• ক্ষুদ্রঋণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আয়বর্ধনমূলক কার্যক্রম।
• মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম।
• দুর্যোগকালীন ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম।
• নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ঋণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ।

দিশার স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার কারণে এটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

দিশা এনজিও শাখা সমূহ

দিশা এনজিও উইকিপিডিয়া

দিশা এনজিও সম্পর্কে উইকিপিডিয়ায় বিস্তারিত তথ্য না থাকলেও দিশা এনজিও বাংলাদেশের একটি জাতীয় পর্যায়ের এনজিও হিসেবে স্বীকৃত। সংস্থাটির প্রধান লক্ষ্য হলো দারিদ্র্য বিমোচন এবং সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। দিশা এনজিও এনজিও বিষয়ক ব্যুরো এবং মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির অধীনে নিবন্ধিত। এর কার্যক্রম বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

কেন দিশা এনজিও লোন বেছে নেবেন?

দিশা এনজিও লোন নেওয়ার কিছু সুবিধা হলো:

• আবেদন থেকে ঋণ বিতরণ পর্যন্ত স্বল্প সময় লাগে।
• সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, বা মাসিক কিস্তির সুবিধা।
• কোনো লুকানো ফি বা অতিরিক্ত চার্জ নেই।
• ঋণের মাধ্যমে আপনার ব্যবসা বা জীবিকা উন্নত হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়নে অবদান রাখে।

আরও জানুনঃ ১ লক্ষ টাকা লোন নিতে চাইলে জানুন  : সুযোগ, প্রক্রিয়া ও বিবেচনা 

শেষ কথা

দিশা এনজিও লোন এবং এর শাখা সমূহ বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক স্বাবলম্বিতা এবং টেকসই উন্নয়নের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া, এবং ব্যাপক শাখা নেটওয়ার্কের কারণে দিশা এনজিও বাংলাদেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য সংস্থা। আপনি যদি ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে আপনার ব্যবসা বা জীবিকা উন্নত করতে চান, তাহলে নিকটস্থ দিশা এনজিও শাখায় যোগাযোগ করুন এবং আজই আবেদন করুন! প্রত্যাশা করি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে “দিদিশা এনজিও লোন ও দিশা এনজিওর শাখাসমূহ সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে পেরেছি “আরও তথ্যের জন্য: দিশার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (www.disabd.org) বা স্থানীয় শাখায় যোগাযোগ করুন।