সিটি ব্যাংক কার লোনের কথা ভাবছেন কি? বর্তমান সময়ে সিটি ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। ব্যাংকটি গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদান করার পাশাপাশি গাড়ি ক্রয় করার জন্য কার লোন প্রদান করছে যা গ্রাহকের স্বপ্ন পূরণের পথে তারা সাহায্য করছে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে সিটি ব্যাংক কার লোন সম্পর্কিত সকল তথ্য জানাবো।
সিটি ব্যাংক কার লোন কি?
সিটি ব্যাংকের কার লোন হচ্ছে এমন একটি লোন পদ্ধতি যার মাধ্যমে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের স্বপ্নের গাড়ি ক্রয় করতে পারবেন ও ব্যক্তিগত কাজে উক্ত গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে লোনের আবেদনকারী ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা থেকে সর্বাধিক ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সিটি ব্যাংক থেকে গ্রহণ করতে পারবেন। গাড়ির মূল্যের উপর নির্ধারণ করে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
সিটি ব্যাংক কার লোনের বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাংকের ন্যায় গ্রাহকদের পাশে সর্বদা রয়েছে সিটি ব্যাংক। তবে অনেক গ্রাহকের স্বপ্ন রয়েছে তাদের স্বপ্নের একটি গাড়ি ক্রয় করার। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য সিটি ব্যাংকের একটি বিশেষ লোন সিটি ব্যাংক। তবে সিটি ব্যাংকের কারণে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে।যেমন:
- সিটি ব্যাংক থেকে গাড়ি করার জন্য নূন্যতম ৪ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া যাবে।
- গাড়ি করার জন্য সর্বাধিক ৬০ লক্ষ টাকা সিটি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া যাবে গাড়ির মোট মূল্যের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- কার লোনের অর্থ পরিশোধ করার জন্য গ্রাহকরা ন্যূনতম ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬ বছর পর্যন্ত সময় পেয়ে থাকেন।
- দ্রুত ও সহজ শর্তে ঋণ গ্রহণের সুবিধা রয়েছে সিটি ব্যাংকে।
- প্রতিযোগিতামূলক ইন্টারেস্ট।
সিটি ব্যাংক কার লোনের যোগ্যতা
বাংলাদেশের সকল ব্যাংকের মতোই সিটি ব্যাংকের বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে সিটি ব্যাংক থেকে কার লোন গ্রহণ করার জন্য। নিম্নে সিটি ব্যাংকের কার্ড লোনের যোগ্যতা সমূহ উপস্থাপন করা হয়েছে
- গাড়ি লোনের জন্য আবেদনকারীর বয়স ন্যূনতম ২২ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
- আবেদনকারী যদি বেতনভোগী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে তার অবশ্যই প্রতি মাসে ন্যূনতম আয় ৪০ হাজার টাকা হতে হবে। তবে আবেদনকারী যদি বেতনভোগী না হয়ে অন্য কোন পেশা বা ব্যবসার সাথে সংযুক্ত থাকেন তাহলে তার প্রতি মাসে ন্যূনতম আয় ৬০ হাজার টাকা হতে হবে।
- এক্ষেত্রে আবেদনকারী বেতনভোগী, ব্যবসায়ী বা পেশাদার কর্মের সংযুক্ত সাথে যুক্ত রয়েছেন তার প্রমাণ পত্র প্রদান করতে হবে।
এ সকল তথ্য ছাড়াও সিটি ব্যাংক থেকে কার লোন নেওয়ার জন্য বেশ কিছু নথিপত্র সিটি ব্যাংকে প্রদান করতে হয় এর সকল নথিপএ সিটি ব্যাংক পর্যালোচনা করে কার লোনটি অনুমোদন করে থাকেন।
সিটি ব্যাংক কার লোনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র
সিটি ব্যাংকে যেসকল নথিপত্র প্রয়োজন হবে তা আমরা আপনাদের সুবিধার্থে কয়েকটি ধাপে উপস্থাপন করেছি। তবে আপনি যদি সকল তথ্য একই সাথে দেখতে চান তাহলে নিম্নের ছবিটি দেখুন:

সাধারণ ডকুমেন্টস (সকলের জন্য)
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি/স্মার্ট কার্ড)-এর ফটোকপি
- আবেদনকারীর সাম্প্রতিক ল্যাব প্রিন্ট পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৩ কপি)
- ই-টিআইএন/সর্বশেষ কর পরিশোধ সনদপত্র
- আবেদনকারীর স্বাক্ষরযুক্ত বৈধ গাড়ির কোটেশন
লোন স্টেটমেন্ট এবং অনুমোদনপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
বেতনভোগী আবেদনকারীদের জন্য
- বেতন সনদ/প্রবর্তনা পত্র (LOI)/সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরিত বেতন স্লিপ/চাকরির চুক্তিপত্র অথবা নবায়ন চুক্তি।
- সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- অফিস আইডি/ভিজিটিং কার্ডের কপি
ব্যবসায়ী আবেদনকারীদের জন্য
- সাম্প্রতিক ২ বছরের ব্যবসায়িক লাইসেন্স
অংশীদারিত্ব চুক্তিপত্র (অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে) - মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেলস/মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন (সীমিত দায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে)
সর্বশেষ শিডিউল এক্স/ফর্ম XII/117 (সীমিত দায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে) - কোম্পানির টিআইএন, বিআইএন, রপ্তানি-আমদানি লাইসেন্স, চুক্তি লাইসেন্স, ডিলারশিপ চুক্তি, কাজের আদেশ বা অন্যান্য ব্যবসায়িক সমর্থন ডকুমেন্টস (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- বিজনেস কার্ড
- কোম্পানির শেষ ১২ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
অংশীদার/পরিচালকের ব্যক্তিগত ব্যাংক স্টেটমেন্ট (১২ মাস)
স্ব-নিয়োজিত ও পেশাজীবী (ফ্রিল্যান্সারসহ) আবেদনকারীদের জন্য
- আয়ের প্রমাণপত্র (যদি থাকে)
- শেষ ৬ মাসের ব্যক্তিগত ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- বিজনেস কার্ড
- পেশাগত সনদপত্র/ফ্রিল্যান্সার আইডি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
ব্যক্তিগত প্যাডে আয়ের স্বঘোষণাকারী বাড়িওয়ালা/বাড়িওয়ালী:
- ভাড়ার সম্পত্তির মালিকানার প্রমাণ (ইউটিলিটি বিলের কপি/সর্বশেষ ভূমি কর রসিদ/মিউটেশন/বিক্রয় দলিলের কপি ইত্যাদি)
- ভাড়ার চুক্তিপত্র (রেভিনিউ স্ট্যাম্পে থাকা উচিত)/ভাড়া রসিদ ও ভাড়ার সারাংশ (নির্ধারিত ফরম্যাট অনুযায়ী)
- সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যক্তিগত ব্যাংক স্টেটমেন্ট
জামিনদারের জন্য ডকুমেন্টস
- জামিনদারের স্বাক্ষরযুক্ত ও আবেদনকারী কর্তৃক সত্যায়িত ২ কপি সাম্প্রতিক ল্যাব প্রিন্ট পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ডের কপি
অফিস আইডি/ভিজিটিং কার্ড
পূর্ব-নিবন্ধিত (ব্যবহত) গাড়ির জন্য ডকুমেন্টস
- পূর্বে ব্যবহার করা বা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি মূল্যায়ন এবং বিআরটিএ নিবন্ধন যাচাইয়ের জন্য আবেদন
- গাড়ির মূল্যায়ন ও বিআরটিএ নিবন্ধন যাচাইয়ের জন্য লিয়েন এবং ডেবিট অথরিটি লেটার
- নিবন্ধন স্বীকৃতি স্লিপ/নিবন্ধন প্রশংসাপত্রের কপি (ডিজিটাল ব্লু বুক), ট্যাক্স টোকেন এবং গাড়ির ফিটনেস শংসাপত্র
- গাড়ির পূর্ববর্তী মালিকের ছবি, এনআইডি কপি এবং ফোন নম্বর
- বিক্রেতার ঘোষণা (ব্যক্তিগত বিক্রেতার ক্ষেত্রে গাড়ির কোটেশনের পরিবর্তে)
সিটি ব্যাংক কার লোনের মাধ্যমে কি কি গাড়ি ক্রয় করা যাবে
সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে যে সকল গাড়ি ক্রয় করা যাবে এসকল গাড়ির মধ্যে রয়েছে: ব্র্যান্ড নিউ কার, রিকন্ডিশন্ড এবং সেকেন্ড হ্যান্ড প্যাসেঞ্জার ভেহিকেল (সেডান, এসইউভি, জিপ, স্টেশন ওয়াগন, মাইক্রোবাস, ইত্যাদি) ৯টি আসনের সর্বোচ্চ গাড়ি। তবে আপনি যদি অন্য কোন ধরনের গাড়ি ক্রয় করতে চান সেক্ষেত্রে সিটি ব্যাংকের দায়িত্ব কর্মকর্তার সাথে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করুন।
সিটি ব্যাংক কার লোনের আবেদন প্রক্রিয়া
সিটি ব্যাংকের কারণে আবেদন প্রক্রিয়া অন্যান্য ব্যাংক থেকে অত্যন্ত সহজতর। উপরোক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী আপনি সিটি ব্যাংকের কার লোনের জন্য যদি উপযুক্ত হন তাহলে আপনার এলাকায় সিটি ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ সিটি ব্যাংকের দায়িত্বগত কর্মকর্তার সাথে কার লোন সম্পর্কে আলোচনা করুন। দায়িত্বটা তো কর্মকর্তা আপনার সকল ডকুমেন্ট পর্যালোচনা করে আবেদনকৃত হোম লোনটি অনুমোদন করবেন।
আরও জানুন: জনতা ব্যাংক লোন ২০২৫ (আপডেট তথ্য)
সারকথা
সিটি ব্যাংক বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংক গুলির মধ্যে অন্যতম একটি ব্যাংক। গ্রাহকদের স্বপ্ন পূরণের পথে তারা সর্বদা দেহকের পাশেই রয়েছেন। তবে যে সকল গ্রাহকের স্বপ্ন পছন্দের একটি গাড়ি ক্রয় করা তাদের অবশ্যই সিটি ব্যাংকের সকল নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। প্রত্যাশা করে আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে সিটি ব্যাংকের কার লোন সম্পর্কিত সকল তথ্য জানাতে পেরেছি ।
1 Comment
আমিন গাড়ি কেনার জন্য লোন নিতে চাচ্ছিলাম