সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন সাধারণত সম্পত্তি বিক্রি না করে বিশেষ প্রয়োজনে অর্থ ব্যবহারের জন্য প্রদান করা হয়। মর্টগেজ লোনের বিশেষ সুবিধা হচ্ছে সম্পত্তির বিপরীতে লোন নেওয়ার জন্য কোন সম্পত্তি বিক্রি করতে হয় না। মোট লোন পরিশোধ করার পরবর্তী সময়ে ব্যাংক হতে উক্ত সম্পত্তি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফেরত প্রদান করে। এ সকল শুধু সুবিধা শুধু মাত্র বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংকই নয় বরং বাংলাদেশের বৃহত্তম সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক প্রদান করে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে, সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন সম্পর্কিত সকল জানাবো।

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন কি

কোন ব্যক্তি যখন কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের নিকট তার স্থায়ী সম্পদ জামানত হিসেবে রেখে মোট সম্পদের বিপরীতে উক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করে তাকে সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন লোন বলা হয়ে থাকে।  মর্টগেজ লোন সাধারণত দীর্ঘ সময়ের জন্য নেয়া হয়ে থাকে। বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য পূরণের জন্য গ্রাহক ব্যাংকের নিকট হতে মর্টগেজ লোন গ্রহণ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বৃহত্তম সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন প্রদান করে থাকে গ্রাহকদের।

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন
সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন এর মেয়াদ

সাধারণত অন্যান্য লোনের তুলনায় সোনালী ব্যাংকের তুলনায় মর্টগেজ লোন পরিশোধের মেয়াদ দীর্ঘ হয়ে থাকে। সাধারণত ৫ বছর হতে  ২০ বছরের মধ্যে সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন পরিশোধ করতে হয়। তবে সময় উপর নির্ভর করে ও সোনালী ব্যাংকের বর্তমান নীতিমালার ওপর নির্ভর করে মর্টগেজ লোন পরিশোধ করার সময়ের পার্থক্য পরিবর্তিত হতে পারে।

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন কত টাকা পাওয়া যায়

মর্টগেজ লোনের পরিমাণ কত টাকা তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে জামানত হিসেবে রাখা মোট সম্পদের উপর। সাধারণত মোট সম্পদের বিপরীতে শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ লোন পাওয়া যায়। যেহেতু কোন স্থায়ী সম্পত্তির মূল্য পূর্ব হতে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে না সে ক্ষেত্রে উক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পত্তির মূল্য যাচাই-বাছাই করে বিপরীতে লোন ইস্যু অনুমোদন করে থাকে।

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন পেতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন সমাজের সকল শ্রেণীর জন্য উন্মুক্ত যদি তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ সম্পদ থাকে মর্টগেজ লোন দেওয়ার জন্য। সমাজে বসবাসকারী সরকারি চাকরিজীবী, বেসরকারি চাকরিজীবী, বাড়িওয়ালা ব্যবসায়ী, পেশাদার কর্মে যুক্ত আছেন এমন ব্যক্তিরা সোনালী ব্যাংক হতে মর্টগেজ লোন পেয়ে থাকেন। তবে মর্টগেজ লোন পেতে দেশ কিছু নথিপত্রের প্রয়োজন হয়।  যেমন:

  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • ঠিকানা ভেরিফিকেশনের জন্য ইউটিলিটি বিল (গ্যাস বিল /পানি বিল/বিদ্যুৎ বিল) এর সদ্য কপি প্রদান করতে হবে।
  • গত এক বছরের বা বিগত অর্থবছরের ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • বিগত ১ বছরের ব্যাংক একাউন্ট এর স্টেটমেন্ট।
  • আবেদনকারী যদি বেতনভোগী হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বেতনের সার্টিফিকেট অর্থাৎ পে স্লিপ প্রদান করতে হবে। যদি আবেদনকারী ব্যবসায়ী কিংবা বাড়িওয়ালা বা পেশাদার কর্মে যুক্ত থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আয়ের প্রমাণপত্র প্রদর্শন করতে হবে।
  • অবশ্যই একজন জামিনদারের অর্থাৎ গ্যারেন্টারের প্রয়োজন হবে। অবশ্যই জামিনদারের পাসপোর্ট সাইজের সদ্যতোলা ১ কপি ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
  • গ্রাহক যে সম্পত্তি ব্যাংকে জমা রাখবেন তার বন্দকযোগ্য সম্পদের দলিল পত্র বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করতে হবে।
  • যদি বন্দক যোগ্য সম্পদ গহনা কিংবা যন্ত্রপাতি হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই মালিকানা প্রমাণপএ পাত্রসহ প্রদান করতে হবে।

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন এর অযোগ্যতা

সোনালী ব্যাংকের মর্টগেজ লোনের যেমন কোথায় রয়েছে তেমন বেশকিছু অযোগ্যতা বিদ্যমান রয়েছে। এ সকল অযোগ্যতার মধ্যে রয়েছে:

  • আবেদনকারীর যদি প্রতিমাসের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের আয়ের সুযোগ না থাকে তাহলে তিনি সোনালী ব্যাংকের মর্টগেজ লোনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন না।
  • অবশ্যই মাসিক আয় থাকতে হবে।
  • পূর্বে ঋণ খেলাপি করেছেন এমন ব্যক্তি যদি মর্টগেজ লোনের জন্য আবেদন করেন সেক্ষেত্রে তিনি মর্টগেজ লোনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন না।

আরো জানুন >>>>>>ইসলামী ব্যাংক কার লোন বা গাড়ি ঋণ যেভাবে নিবেন ২০২৫<<<<<<<<

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন সুদের হার

সাধারণত ব্যাংকের মর্টগেজ লোনের সুদের হার ১২% হতে ১৫% মধ্যে থাকে। তবে সময়ের সাথে অবশ্যই সোনালী ব্যাংকে নীতিমালা অনুসারে, সোনালী ব্যাংকের মর্টগেজ লোনের সুদের হার পরিবর্তিত হতে পারে। তবে অন্যান্য লোন যেমন পার্সোনাল লোন, হোম লোন হতে মর্টগেজ লোনের সুদের হার তুলনামূলক ভাবে কম হয়ে থাকে।

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন প্রদানের আগে যা যাচাই-বাছাই করে

সোনালী ব্যাংক গ্রাহকদের মর্টগেজ লোন প্রদান করার পূর্বে অবশ্যই গ্রাহকদের বর্তমান অবস্থা ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র বিবেচনা করে লোন প্রদান করে থাকে। যেমন:

  • আবেদনকারীর প্রতিমাসে ন্যূনতম আয় কত বা মাসিক গড়ায় কত টাকা এটি সোনালী ব্যাংক পর্যবেক্ষণ করে।
  • গ্রাহকের বর্তমান পেশা কি।
  • গ্রাহক বর্তমানে কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।
  • গ্রাহক যদি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ব্যবসার বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে থাকে সোনালী ব্যাংক।
  • বিগত বছরের ও বিগত কয়েক বছরের প্রধান কৃত ট্যাক্স রশিদ।
  • গ্রাহকের বর্তমানে কোন অপরিশোধিত লোন রয়েছে কিনা।

আরো জানুন >>>>>>পূবালী ব্যাংক গাড়ি লোন (আপডেট তথ্য)<<<<<<<<

সোনালী ব্যাংক হতে মর্টগেজ লোন নেওয়ার সুবিধা

মর্টগেজ লোন হলো গ্রাহকের মোট সম্পত্তির বিপরীতে লোন গ্রহণ করা। এক্ষেত্রে গ্রাহকের মোট সম্পত্তি বিক্রি করার কোন প্রয়োজন নেই। গ্রাহক ধীরে ধীরে ব্যাংককে ঋণ পরিশোধ করে পুনরায় উক্ত সম্পদের মালিক হতে পারবেন। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে মর্টগেজ লোন লোন প্রয়োজন হয়ে থাকে। যেমন: বিবাহের জন্য, ব্যবসার জন্য, উচ্চ শিক্ষার জন্য, চিকিৎসার জন্য।

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন সম্পর্কিত বহুল প্রশ্নসমূহ

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন সুদের হার কত ?

সাধারণত ব্যাংকের মর্টগেজ লোনের সুদের হার ১২% হতে ১৫% মধ্যে থাকে

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন এর মেয়াদ কত ?

সাধারণত ৫ বছর হতে  ২০ বছরের মধ্যে সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন পরিশোধ করতে হয়

সোনালী ব্যাংক মর্টগেজ লোন কত টাকা পাওয়া যায় ?

মোট সম্পদের বিপরীতে শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ লোন পাওয়া যায়

সারকথা

মানুষ তার বিশেষ প্রয়োজনে, তার বিশেষ সম্পত্তি বা সম্পদ বিক্রয় করে থাকে। তবে উক্ত নাগরিক যদি ঋণ দীর্ঘ সময় ধরে পরিশোধ করার জন্য সক্ষম হন তাহলে উক্ত সম্পত্তি বা সম্পদ বিক্রি না করে সোনালী ব্যাংক হতে মর্টগেজ লোন দিতে পারেন যা পরবর্তীতে ঋণ পরিশোধের পর উক্ত নাগরিকের স্থায়ী সম্পত্তিতে পুনরায় রূপান্তরিত হবে।

অন্যান্য পোস্টগুলো