সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন সম্পর্কে জানেন কি? সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের বৃহত্তম একটি সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সোনালী ব্যাংক গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের লোন সুবিধা প্রদান করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য লোন প্রদান করে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে “সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন” সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবো। সেহেতু এই আর্টিaকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন কি
সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোন হল এমন এক ধরনের বিশেষ লোন যা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের মাতা-পিতা তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর করার জন্য সোনালী ব্যাংক থেকে এই বিশেষ লোনটি গ্রহণ করতে পারেন। তবে সোনালী ব্যাংক থেকে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য সর্বাধিক কত টাকা লোন সুবিধা পাওয়া যায় এটি সোনালী ব্যাংকের দায়িত্ব কর্মকর্তা আপনাকে এ বিষয়ে বিস্তারিত অবহিত করবেন।
সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোনের বৈশিষ্ট্য
প্রতিটি ব্যাংকের মতো সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোনের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। এসকল বৈশিষ্ট্যের কারণে সোনালী ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংক থেকে ব্যতিক্রম। এ সকল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে:
- শিক্ষা লোন কেবলমাত্র শিক্ষার্থীর পিতা-মাতা আর তাদের সন্তানের শিক্ষার খরচ মেটাবার জন্য ব্যয় করতে পারবেন।
- সোনালী ব্যাংকের কোন লুকানো চার্জ নেই।
- সহজ শর্তাবলি অনুসরণ করে লোনের আবেদন করতে হয়।
সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোনের যোগ্যতা
সোনালী ব্যাংক থেকে স্টুডেন্ট লোন পেতে হলে অবশ্যই আবেদনকারী শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবকদের বেশ কিছু যোগ্যতা থাকা অত্যন্ত আবশ্যক। সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোনের জন্য যে সকল যোগ্যতা থাকা অত্যন্ত আবশ্যক তা নিম্নে উপস্থাপন করা হয়েছে:
- অবশ্যই শিক্ষার্থীর ব্যয়ভার বহন করছে এমন অভিভাবক বা শিক্ষার্থীর পিতা-মাতা থাকতে হবে।
- স্টুডেন্ট লোনের জন্য অবশ্যই অভিভাবক বা পিতামাতা যিনি আবেদন করবেন তাকে অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী।
- অবশ্যই শিক্ষার্থীর পিতা-মাতা বা অভিভক্তি নির্ভরযোগ্য আয়ের উৎস থাকতে হবে এবং প্রতি মাসে ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ন্যূনতম আয় এবং মাসিক ঋণ পরিশোধ করার যোগ্যতা থাকতে হবে।
এছাড়া আরো বেশ কিছু শর্তাবলি রয়েছে যা আপনাকে সোনালী ব্যাংকের দায়িত্ব কর্মকর্তা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র
প্রতিটি ব্যাংক লোন গ্রহণ করার সময় অবশ্যই গ্রাহকদের আবেদনের সত্যতা এবং যোগ্যতা বিবেচনা করার জন্য বেশ কিছু নথিপত্র গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করে থাকেন। তবে সোনালী ব্যাংকে স্টুডেন্ট লোনের জন্য যে সকল নথিপত্র প্রয়োজন হবে তা নিম্নরূপ:
- আবেদনকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষার্থীর পিতা-মাতা ও জামিনদার এর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি প্রয়োজন হবে। তবে শিক্ষার্থী যদি বিদেশে আধান করতে চায় সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর পাসপোর্ট এর ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
- শিক্ষার্থীর, আবেদনকারীর ও জামিনদারের সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি প্রদান করতে হবে। অবশ্যই ছবি ল্যাব প্রিন্ট হতে হবে। ছবির সংখ্যা প্রয়োজন অনুসারে অতিরিক্ত ছবি আপনি সাথে রাখুন।
- আবেদনকারী যদি বেতন ফকি অর্থাৎ চাকরিজীবী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বেতন সার্টিফিকেট বা পে স্লিপ সংগ্রহ করে ব্যাংকে প্রদান করতে হবে।
- আবেদনকারী যদি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে বৈধ ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি, মাসিক আয় এর বিবরণী ও প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র প্রদান করতে হবে।
- শিক্ষার্থীর শিক্ষার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অবশ্যই প্রদান করতে হবে। (এক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংকের দায়িত্ব ও কর্মকর্তারা আপনাকে এ বিষয়ে জানিয়ে দিবেন যে শিক্ষার্থীর কোন কোন প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রয়োজন হবে)
- ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ন্যূনতম ৬ মাসের কিংবা সর্বাধিক ১২ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রদান করতে হবে।
এছাড়া আর কোন ডকুমেন্ট প্রয়োজন হলে ব্যাংক কর্মকর্তা আপনাকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানিয়ে দিবেন আপনার কি কি নথিপত্র প্রয়োজন।
সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার পদ্ধতি
সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট নেওয়া খুবই সহজ সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার নিকটস্থ সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখা বা উপশাখায় গিয়ে দায়িত্ব কর্মকর্তার সাথে স্টুডেন্ট লোন সম্পর্কে আলোচনা করুন। দায়িত্ব তো ব্যাংক কর্মকর্তা আপনাকে এ বিষয়ে অবহিত করবেন যে, আপনার কি কি নথিপত্র প্রয়োজন হবে এবং কি কি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। সকল প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রদান করার পর ব্যাংক কর্মকর্তা কিছু সময় বা কিছুদিন সময় নিয়ে আপনার আবেদন করার লোনটি পর্যালোচনা করে লোনটি অনুমোদন করবেন।
আরো জানুন >>>>>>স্টুডেন্ট লোন ইসলামী ব্যাংক ২০২৫ (আপডেট তথ্য) <<<<<<<<
সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন সুবিধা
বাংলাদেশের সরকারি বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক। সোনালী ব্যাংক সর্বদা তাদের গ্রাহকদের পাশে রয়েছে । এক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংকে গ্রাহকদের সন্তানেরা যাতে উচ্চশিক্ষায় লাভ করতে পারে তারা এদিকে রয়েছে সর্বদায় সচেষ্ট। সোনালী ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণের পর আপনার বাড়তি ব্যয় হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সোনালী ব্যাংকে স্টুডেন্ট লোন পরিশোধ করার উপায়ও বেশ সহজ।
সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন সুদের হার
সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোনের সুদের হার সম্পর্কে এই পর্যন্ত কোন তথ্য জানা যায়নি তবে সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে আপনি খুব সহজেই সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোনের সুদের হার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম
সোনালী ব্যাংকের শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম এর মেয়াদকাল সাধারণত ১০ বছর হয়ে থাকে। মাত্র ৫০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ টাকা পর্যন্ত মাসিক সঞ্চয় করতে পারবে শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা। ১৮ বছর বেশি বয়স হয়েছেন যে কোন সুস্থ ব্যক্তি সোনালী ব্যাংকে এই হিসাব খুলতে পারবেন। নির্দিষ্ট সময় পূর্ণ হওয়ার পর ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী আর নির্দিষ্ট মুনাফা সহ মুনাফা লাভ করতে পারবেন।
আরো জানুন >>>>>> ব্র্যাক ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন ২০২৫ (আপডেট তথ্য) <<<<<<<<
সোনালী ব্যাংকের যোগাযোগের তথ্য
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের শাখা রয়েছে। আবার কোথাও কোথাও সোনালী ব্যাংকের বেশ কিছু উপ শাখা রয়েছে যার মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। সোনালী ব্যাংক সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য ও জানার জন্য আপনি সরাসরি ইসলামী ব্যাংকের যে কোন শাখায় উপস্থিত হতে পারেন কিংবা সোনালী ব্যাংকের কাস্টমার নাম্বার সার্ভিস ১৬৬৩৯ নম্বরে বা সোনালী ব্যাংকের ই-মেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করুন। ই-মেইল ঠিকানা: sblho.card@sonalibank.net.bd
শেষ কথা
প্রত্যাশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে “সোনালী ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন”সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পেরেছি। সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক তবে তারা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য বেশ সচেষ্ট। শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য তারা সর্বদা পাশে রয়েছে।
নোট: উপরে উল্লিখিত সকল তথ্যসমূহ বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সোনালী ব্যাংক ওয়েবসাইটঃ https://www.sonalibank.com.bd